পাহাড় এবং সমুদ্র বরাবরই আকর্ষণ করে
ভ্রমন পিয়াসিদের । প্রকৃতির নিবিড় ছোঁয়া আর বুক উজাড় করা সৌন্দর্য মুহুর্তেই ভুলিয়ে
দেয় জীবনের যাবতীয় হতাশা । শীত এলেই শুরু হয় পর্যটন মৌসুম । পাহাড়ী প্রকৃতির একান্ত
সান্নিধ্য পেতে আর উচ্ছল ঝর্ণার শীতল স্পর্শ পেতে হলে সীতাকুণ্ড ইকোপার্কই হলো প্রকৃত
স্থান ।১৯৯৬ একর ইকো পার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনটি দুই অংশে বিভক্ত । এক হাজার একর
জায়গায় বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ৯৯৬ একর জায়গা জুড়ে ইকোপার্ক এলাকা । বোটানিক্যাল গার্ডেন
ও ইকো-পার্কের উত্তরে শুধু পাহাড় আর পাহাড় । এ যেন পাহাড়ের স্রোত কেবলই বয়ে চলেছে হাট
হাজারী, মন্দাকিনী ও ফটিকছড়ি পর্যন্ত । পাহাড়ের চুড়ায় কয়েকটি পিকনিক কর্ণার, বিশ্রামাগার,
টয়লেট, পানির জলের ব্যবস্থা । ইকোপার্কে রয়েছে- মেছোবাঘ, ভালুক, মায়াহরিণ, বানর, হনুমান,
শুকর, বনরুই, সজারু, বনমোরগ প্রভৃতি পশু । দাড়াঁশ, গোখরা, লাউডগা, কালন্তি প্রভৃতি
সাপ থাকলেও শীতকালে বের হয় কম । ১৬ প্রজাতির দূলর্ভ গোলাপসহ জবা, নাইট কুইন, লিলি,
স্থল পদ্ম, মোসান্ডা, রংগন, রাধা চুঁড়া, কামেনি, কাঠ মালতি, এলামেন্ডা, বাগান বিলাস,
হাসনা হেনা, গন্ধরাজ, ফনিকা মিলে রয়েছে ১৫০জাতের ফুল । এছাড়া পাহাড়ের মাঝে সৃজিত হয়েছে
ফুল ও ফলের গাছের বাগান যাতে পশু-পাখি তার খাদ্য ও আবাসস্থল ফিরে পাবে । শাল, সেগুন,
গর্জন, চাম্পা, আমলকি, আম, জাম, হরিতকি প্রভৃতি কাঠ, ফল ও ঔষধি বৃক্ষ আর লতা- গুল্ম
মিলে আছে ১৪৫ প্রজাতির গাছ-গাছালি। বিরল প্রজাতির সাইকাস পার্কটিকে আরো সমৃদ্ধ করেছে
। অত্যাধুনিক গ্রীন হাউজ স্থাপন করা হয়েছে । এখানে বিভিন্ন প্রজাতির দৃষ্টিনন্দন ১০০টি
অর্কিড আছে । ইকোপার্ক ফটকের সামনেই রয়েছে শিশুদের জন্য আর্কষনীয় পার্ক এবং বিভিন্ন
রাইড । রয়েছে শাপলা ফুলে ঘেরা পদ্ম পুকুর এবং কবি কাজী নজরুল ইসলামের আকর্ষনীয় ম্যুরাল
।
প্রধান গেইট দিয়ে পার্কে ঢুকলেই পর্যটন অফিস । অফিসের সামনে প্রস্তর ফলকে উৎকীণ’ আছে ইকোপার্কের মানচিত্র। সুদৃশ্য ল্যান্ডস্কেপ থেকে দর্শনীয় স্থানগুলো বাছাই করে নিতে পারেন ।কিছুদুর উঠলেই রয়েছে সুপ্তধারা
জলপ্রপাত । ঝর্ণাও স্নিগ্ধতা পেতে হলে সিঁড়ি ধরে নেমে যান পাহাড়ের তলদেশে । বেশ কিছু
সিঁড়ি অতিক্রম করলেই একটি ছাউনি । সেখানে একটু বিশ্রাম নিয়ে পাহাড়ী ঢাল বেয়ে নীচে নামতে
হবে সর্তকতার সাথে । না হলে গড়িয়ে পাহাড়ের গভীর তলদেশে পড়ার সম্ভাবনা আছে । তবে রোমাঞ্চকর
অভিজ্ঞতা পেতে হলে নীচে না নেমে উপায় নেই । তবে পাহাড়ী ছরা ধরে পাথুরে পথ ধরে পানির
শীতলতা নিতে নিতে পৌঁছানো যায় ঝর্ণার একেবারে নীচে । শত ফুট ওপর থেকে অবিরাম গড়িয়ে
পড়া ঝর্ণাতে একটু ভেজা বা উঞ্চতা আহরনের আনন্দই আলাদা ।যুগ যুগান্তরে ব্যথা ঝরে অশ্রু
হয়ে সহস্রধারা’ এ লেখা সম্বলিত আরেকটি
সাইন বোর্ড নিয়ে ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের শেষ সীমানায় রয়েছে সহস্রধারা জলপ্রপাত
নামে আরেকটি ঝর্না। এক হাজার বিশ ফুট নিচে ৪৮৩টি সিঁড়ি বেয়ে এবং কিছু পাহাড়ি পথ অতিক্রম
করে চলে যাওয়া যায় ঝর্ণার পাদদেশে । এখানে এসে পানির স্নিগ্ধ পরশ পাওয়ার লোভ সামলানো
দায়। লোভ সামলাতে পারেননি আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলামও। তাইতো তিনি এই ঝর্ণার পরশ
নিতে ১৯২৯ সালে জানুয়ারী মাসে ছুটে এসেছিলেন। রচনা করেছেন তাঁর বিখ্যাত গান “আকাশে
হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ । ঐ পাহাড়ের ঝর্ণা আমি উধাও হয়ে রইগো” । পাহাড়ের গায়ে প্রস্তর
ফলকে উৎকীণ’আছে সেই পঙতিগুলো ।ঝর্ণা
দেখে উপরে এসে কিছু খেয়ে এবং গলাটা ভিজিয়ে নিতে পারেন দোকান থেকে । দাম একটু বেশিই
নেবে । কারণ পণ্যগুলো অনেক উপরে বয়ে আনতে হয় পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে উঠে ডুবন্ত সুর্য
ও সমুদ্রতট দেখা যাবে পশ্চিমে তাকালে । ছবির মতো দেখতে অদুরবর্তী সমুদ্রের রূপ না দেখলে
বোঝা যায়না । পার্কের উত্তর পাশেই রয়েছে চন্দ্রনাথ মন্দির । সহস্র ধারা ইকো পার্কের
শেষ সীমানা । উপরে বিমান বাহিনীর টাওয়ার থাকলেও নিরাপত্তার অভাবে দর্শনার্থীদের উপরে
উঠা নিষেধ রয়েছে ।
সীতাকুন্ড পৌরসদর থেকে দুই কিলোমিটার দক্ষিণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে গেলেই ফকিরহাট এলাকায় সীতাকুণ্ড বোটানিকেল গার্ডেন ও ইকোপার্ক । প্রধান সড়ক থেকে পূর্বদিকে এক কিলোমিটার রাস্তা গেলেই ইকোপার্কের প্রধান ফটক । এখানে আগত দর্শনার্থীদের একটু থামতে হবে । কারণ, জনপ্রতি দশ টাকা করে টিকিট কাটতে হবে । তবে শিক্ষার্থীদের জন্য টিকিটের মূল্যে ছাড় রয়েছে । এরপরই পার্কের সৌন্দর্য পথ মেলে যাবে আপনার সামনে । আপনি ইচ্ছা করলে গাড়ী নিয়ে (যদি থাকে) কিংবা পায়ে হেঁটে গাছ-গাছালির সুশীতল ছায়ায় শুরু করুন পাহাড়ের আঁকা-বাঁকা পথযাত্রা । তবে আরোহন শুরু করার আগে ইকোপার্ক সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন পর্যটন অফিস থেকে।
Like My Facebook
demo
সিলেট ,সিলেট
12 Jan 2024
সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা
সিলেট ,সিলেট
11 Jan 2024
চেয়ারম্যান ঘাট
নোয়াখালী ,চট্রগ্রাম
10 Jan 2024
নলচিড়া ঘাট, হাতিয়া
নোয়াখালী ,চট্রগ্রাম
09 Jan 2024
ড্রিম ওয়ার্ল্ড পার্ক
নোয়াখালী ,চট্রগ্রাম
07 Jan 2024
যোগীর ভবন
বগুড়া ,রাজশাহী
06 Jan 2024 | ভিডিও দেখুন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী ,রাজশাহী
05 Dec 2023
মা ভবানী মন্দির
বগুড়া ,রাজশাহী
04 Dec 2023 | ভিডিও দেখুন
ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্ক
বগুড়া ,রাজশাহী
22 Aug 2023 | ভিডিও দেখুন
বাঘা মসজিদ
রাজশাহী ,রাজশাহী
03 Jul 2023