মসজিদটি জনহীন এক জনপদের নীরব সাক্ষী। এর নাম নিয়ে আছে নানা কথা কেউ বলেন সৌর মসজিদ , কেউ বলেন সুরা মসজিদ , আবার কেউ বলে শাহ সুজা মসজিদ। সুর শব্দের অর্থ অপদেবতা বা জ্বীন। স্থানীয় মুরুববীরা জানান, এক রাতের মধ্যে জ্বীনেরা এটি নির্মাণ করে দেন, তাই এর নাম সুরা মসজিদ হয়েছে। সৌর শব্দের অর্থ আসমানী বা গায়েবী অর্থাৎ লোকচক্ষুর আড়ালে যা ঘটে বা হয় তাই গায়েবী। অর্থাৎ গায়েবী ভাবেই মসজিদটি নির্মীত হয়েছে। আবার অনেকে বলেন- মোগল আমলে বাংলার নবাব সুজা এটি নির্মাণ করে দেন বলে এর নাম শাহ সুজা মসজিদ হয়েছে। এমন ধরণের আরো অনেক কথা লোকমুখে শোনা যায়। বাস্তবে শাহ সুজার ক্ষমতা গ্রহণের অনেক আগে এ মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। মসজিদটি পুর্ব-পশ্চিমে লম্বা। এর বাইরের মাপ ১২.১২ মি. × ৭.৮৭ মি. এবং প্রধান কক্ষের ভিতরের আয়তন ৪.৮৪ মি. × ৪.৮৪ মি. । মসজিদের প্রধান কামরায় চারকোণে এবং বারান্দার দুইকোনে বাহিরের দিকে একটি কোরে মিনার আছে। এগুলো কাল পাথরের তৈরি। প্রধান কামরার ও বারান্দার পুর্ব দেয়ালে তিনটি করে প্রবেশ দ্বার আছে। প্রধান কক্ষের উপরে একটি গম্বুজ আছে, বারান্দার উপরে তিনটি ছোট গম্বুজ আছে। ভিতরে পশ্চিম দেয়ালে মিহরাবগুলোতে উন্নতমানের কারুকাজ। মসজিদে ইটের সঙ্গে পাথরের ব্যবহার, দেয়ালের মাঝে পাথরের স্তম্ভ, ইটের গাঁথুনি তা চোখে পরার মত। এছাড়া প্রত্যেক দরজার নিচে চৌকাঠ পাথরের তৈরি। পুর্বে মসজিদে প্রবেশের সিঁড়ি আছে। এখানকার কালো ও বেলে পাথর বাঙলার পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত রাজমহল থেকে আনা হয়েছে বলে মনে করা হয়। ধারণা করা হয় এখানকার এই প্রাচীনকীর্তির ধ্বংসাবশেষ গুপ্তযুগের পরে নয়।
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট ইউনিয়নের চৌগাছা মৌজায় (হিলি রোড) প্রাচীন এ মসজিদটি অবস্থিত। দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে গেলে পাকা রাস্তার উত্তর ধারে ৩৫০-২০০ গজ আয়তন বিশিষ্ট বিশাল একটি পাড়ওয়ালা দীঘির দক্ষিণ ধারে মসজিদটি অবস্থিত।
Total Site Views: 1374101 | Online: 3