রামসাগর কোন সাগর নয় তারপরেও তার নাম রামসাগর। সৌন্দর্য্য এবং আয়তনের দিক থেকে রামসাগর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দীঘি। এ দীঘিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট জাতীয় উদ্যান। রামসাগর ও জাতীয় এই উদ্যানকে ঘিরে প্রতিদিন সারা দেশ থেকে ভ্রমন পিঁপাসু হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমায়। বন্ধুরা তোমরা যারা দিনাজপুর ভ্রমন করতে যাবে তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, দিনাজপুর গেলে কিন্তু রামসাগর দেখতে যাওয়া চাই-ই-চাই। কারণ রামসাগর না গেলে দিনাজপুর ভ্রমনের আনন্দটাই মাটি। চলো তাহলে ঘুরে আসি দিনাজপুর জেলার রামসাগর দীঘি থেকে।
দিনাজপুর
সদর থেকে ৮ কিলোমিটার
দূরে দিনাজপুর শহর থেকে ৫
মাইল দক্ষিণে এই দিঘিটির অবস্থান।
শুধুমাত্র জলাধার বা ঐতিহাসিক কীর্তি
নয়, এক বিশাল প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যের অধিকারী একটি মনোরম পার্ক
রয়েছে এখানে। পলাশী যুদ্ধের প্রাক্কালে দিনাজপুরের বিখ্যাত রাজা রামনাথ ১৭৫০-১৭৫৫ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে
রামসাগর দীঘিটি খনন করান এবং
তার নামেই এর নামকরণ করা
হয়। দারুণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এই দিঘিটি
মানুষের খনন করা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দিঘি। তটভূমিসহ রামসাগরের আয়তন ৪,৩৭,৪৯২ বর্মিগটার,
দৈর্ঘ্য ১,০৩১ মিটার ও প্রস্থ ৩৬৪ মিটার। গভীরতা গড়ে প্রায় ১০ মিটার। দীঘিটির পশ্চিম
পাড়ের মধ্যখানে একটি ঘাট ছিল যার কিছু অবশিষ্ট এখনও রয়েছে।
কথিত আছে, বহু
বছর আগে রাজা রামনাথ রাজ্যের মানুষের পানির অভাব মেটানোর জন্য একটি দীঘি খনন করা শুরু
করেন। কিন্তু যতই খনন করা হোক না কেন, দীঘি দিয়ে পানি উঠে না। কেউ কোনো কারণ বুঝতে
পারছিল না। হঠাৎ একদিন রাজা স্বপ্ন দেখেন, দীঘির মাঝে একটি ছোট মন্দির স্থাপন করে রাজা
পূজা করলে দীঘিতে পানি উঠবে। স্বপ্নমতে রাজা রামনাথ মন্দির স্থাপন করে পূজা করলে দীঘিতে
পানি উঠে এবং রাজা রাম পানিতে ডুবে মারা যান। পরে তার স্মৃতিস্বরূপ এই স্থানের নাম
হয়েছে ‘রামসাগর’।
প্রতিদিন সকাল
থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে রামসাগর জাতীয় উদ্যান । এখানে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি
২ টাকা। নির্দিষ্ট মূল্য পরিশোধ করে গাড়ি নিয়েও জায়গাটিতে প্রবেশ করা যায়। রামসাগরে
বাহনের প্রবেশ মূল্য রিকশা ৫ টাকা, কার বা জিপ ৩৫ টাকা, সাধারণ মাইক্রোবাস ৬০ টাকা,
বড় মাইক্রোবাস ৭৫ টাকা। নিজস্ব বাহন না থাকলে দিনাজপুর শহর থেকে ব্যাটারি চালিত রিকশায়
রামসাগর আসতে সময় লাগে প্রায় ত্রিশ মিনিট। ভাড়া ১০০-১৫০ টাকা।
ঢাকা
থেকে বাস ও ট্রেন
দুই পথেই যাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী (Dinajpur) বাসগুলো সাধারণত
ছাড়ে গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে।
এ পথে নাবিল পরিবহনের
এসি বাস চলাচল করে।
ভাড়া ৯০০ টাকা।
এ ছাড়া হানিফ এন্টারপ্রাইজ,এস আর ট্রাভেলস,কেয়া পরিবহন, এস এ পরিবহন,
শ্যামলী পরিবহন, নাবিল পরিবহনের নন-এসি বাসও
চলাচল করে এ পথে।
ভাড়া ৫০০-৫৫০ টাকা।
Total Site Views: 1532072 | Online: 9